সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠির রাজাপুরে স্বামীর অত্যাচার সইতে না পেরে এক সন্তানের জননী নাসরিন আক্তার নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) রাত ১১ টার দিকে উপজেলার বড় কৈবর্তখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত গৃহবধূর নাম নাসরিন আক্তার (২৩)। সে বড় কৈবর্তখালী গ্রামের আবু বকর ফকিরের ছেলে মো. রফিকুল ইসলামের (৩৫) এর স্ত্রী এবং উপজেলার গালুয়া দুর্গাপুরের মো. নাসির খানের মেয়ে। পুলিশ রাতেই মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করছেন রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি পুলক চন্দ্র রায়।
ঘটনার পর আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগে স্বামী রফিকুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ। গৃহবধূর পিতা মো. নাসির খান বাদি হয়ে জামাতা রফিকের নামে রাজাপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা সূত্রে জানাযায়, ২০১৭ সালে পারিবারিক ভাবে মো. রফিকুল ইসলামের সাথে নাসরিন আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের ৪ বছরের মো. আয়ান নামে একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই রফিকুল বিভিন্ন মেয়ের সাথে পরকিয়ায় আসক্ত হয়ে পরলে দুজনের মধ্যে প্রায়ই এই নিয়ে ঝগড়া লেগে থাকতো। আর এই বিষয়ে নাসরিন কিছু বললেই তাকে মানুষিক এবং শারিরীক নির্যাতন করতো। ঘটনার দিন দুপুর ১২ টার দিকে রফিকুল ফোনে কথা বলার সময় নাসরিন ফোনটি হাতে নিয়ে মেয়ে কন্ঠ শুনতে পায়। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে নাসরিনকে শারিরীক নির্যাতন করলে সে ঘর থেকে চলে এবং সন্ধ্যা ৬ টার দিকে ঘরে ফেরে। তখন রফিকুল স্ত্রীকে বলে তুই মরতে পারলি না আবার ঘরে আসছিস কেন? এর পরে রাত ১১ টার দিকে নাসরিন নিজ ঘরের সুপারি গাছের আড়ার সাথে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে পরে। রফিকুলের পরিবারের লোকজন নাসরিনকে ঝুলতে দেখে তাকে নামিয়ে ১২ টা ১৫ মিনিটের সময় হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
এ ব্যাপারে মামলার আইও রাজাপুর থানার এস আই পলাশ বলেন, পারিবারিক কলহের কারনে রফিক প্রায়ই নাসরিনকে মারধর করতো। এ কারনেই নাসরিন আত্মহত্যা করেছে। এই ঘটনায় নাসরিনের বাবার দায়ের করা মামলায় রফিকুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার সকালে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। অন্যদিকে নাসরিনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঝালকাঠি মর্গে পাঠানো হয়েছে।
রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলক চন্দ্র রায় বলেন, খবর পেয়ে নাসরিন আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিতহের পিতার মামলায় স্বামী রফিকুলকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।